কিভাবে গোয়েন্দা হওয়া যায়

  ছোটবেলা থেকে গোয়েন্দা হওয়ার শখ কার না আছে!!!  আমি আপনাদের সেই শখ পুরনের জন্য  কিছু উপদেশ ও পরামর্শ দিবো বলে আজ এই লিখাটা লিখছি।  লেখার গভীরে যাওয়ার আগেই বলে নিচ্ছি লেখার উদ্দেশ্য শুধুই সাধারণ ধারণা দেয়া।  একটু চেষ্টা করলে যে কারো পক্ষেই পারা সম্ভব। আজ চেষ্টা করবো নতুন কিছু শেখাতে এবং শিখতে।  আর চেষ্টা করবো আমার পক্ষে যতটুকু কম সময়ের ব্যবধানে নতুন লেখা দিতে পারা যায় তা দিতে।  শুধু দরকার সবার মতামত।  তো! শুরু করা যাক---  একজন গোয়েন্দাকে একই সাথে প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন, শক্তিশালী, উপস্থিত বুদ্ধিসম্পন্ন, জ্ঞানী।  অপরাধ বিজ্ঞান,পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞানসহ আরো  বিভিন্ন বিষয়ের জ্ঞানও রাখতে হবে।  এগুলো গেলো গতবাধা কথা, আমরা হতে চাচ্ছি শখের গোয়েন্দা।  যেহেতু আমরা উচ্চমাত্রার গোয়েন্দা হওয়ার চেষ্টা করছিনা সেহেতু এগুলোর কোন কোন বিষয়ে  হালকা পাতলা ধারণা থাকলেই হবে।  আর নিতান্তই প্রয়োজনীয় বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে আমাদের পরবর্তী  লেখাগুলোতে আলোকপাত করা হবে।  আজ আমরা আলোচনা করবো করবো এমন কিছু গুণাবলি নিয়ে যা  একজন শখের গোয়েন্দার না থাকলেই নয়।  সন্দেহপ্রবণতা:  একজন শখের গোয়েন্দা হিসেবে আপনার মধ্যে অবশ্যই সন্দেহপ্রবণতা থাকতে হবে।  যেবিষয়ে গোয়েন্দাগিরি করবেন সে বিষয়ের সাথে সংযুক্ত সবাইকেই সন্দেহ করা শিখতে হবে।  তাহলে সবার সম্পর্কেই যেকোনো তথ্য আপনার সহজে বিশ্বাস হবেনা যতক্ষণনা সেটার প্রমাণ মিলছে।  তবে একটা বিষয়, যখন তদন্ত করবেন তখন নিজের মধ্যে সন্দেহপ্রবণতাটা রাখবেন।  এই গুণটা সবসময়ের জন্যে আয়ত্তে এনে ফেলাটা ঠিক হবেনা।  তাহলে অনেক সময় নিজের খুব কাছের মানুষদেরও বিশ্বাস করতেও কষ্ট হবে।  আর সেটা কারোই কাম্য নয়।  জানার আগ্রহ:  সঠিক ও সত্য তথ্য জানার জন্যে অদম্য চেষ্টা করতে হবে।  আর সে জন্যে চাই নিঃস্বার্থ ভালোবাসার মতই নিঃস্বার্থ আগ্রহ !  তাছাড়া বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানার জন্যেও প্রচুর আগ্রহ থাকতে হবে।  বিভিন্ন বিষয়ে ভালো ধারণা রাখলে সেগুলো পরবর্তিতে  কখনো না কখনো কাজে আসবেই !  বই পড়া:  উপরের টাইটেলটা দেখে অনেকেই অবাক হতে পারেন যে বই পড়া তদন্তে কি সহায়তা করবে !  অবাক হওয়ার কিছু নেই। বই পড়ার অভ্যাস অনেক বিষয়ে গভীর ধারণা দিতে সহায়তা করবে।  গল্প-উপন্যাস পড়া যেতে পারে। তবে বিষয়ভিত্তিক বইগুলো পড়ার অভ্যাস থাকলে সেটা খুব কাজে দিবে।  ধরূণ কোন তদন্তের কাজে বের হলেন সাইকেল নিয়ে। হঠাতই আপনার পায়ের পেশীতে খিঁচুনি ধরলো !  এখন আশেপাশে কোন ডাক্তার নেই যে আপনাকে উদ্ধার করবে এই অবস্থা থেকে।  কিন্তু আপনি একজন বিচক্ষণ মানুষ। আপনি কোন একটা বইয়ে বা আর্টিকেলে জেনেছেন কিভাবে  পেশীর খিঁচুনি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ।  তখন আপনি আপনার জানা তথ্য প্রয়োগ করে নিজেই নিজেকে উদ্ধার করতে পারেন।  অধ্যবসায়:  ছোটবেলায় এমনকি নবম দশম শ্রেণীতেও কম বেশি সবাই অধ্যবসায় রচনাটা পড়ে থাকবেন  (না পড়লে সেটা আপনার দুর্ভাগ্য বলা যেতে পারে) !  শখের গোয়েন্দা হতে অধ্যবসায়েরও যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা আছে।  কোন কাজে সহজেই হাল ছেড়ে দেয়া যাবেনা। একবার না পারলে আবার,  সেবারও না পারলে আবার…  এভাবে চেষ্টা করে যেতে হবে। সফলতা আসবেই !  রবার্ট ব্রুসের গল্পটা হয়তো সবারই জানা।  তিনি ছয়বার যুদ্ধে হারার পরে যখন আশা ছেড়ে দিলেন তখন এক অধ্যবসায়ী মাকড়সার  কাছ থেকে অনুপ্রেরিত হলেন।  সপ্তমবারের মতো আবার যুদ্ধ করলেন এবং নিজের রাজ্য ফিরে পেলেন !  এভাবেই অধ্যবসায়ি হতে হবে এখন শখের গোয়েন্দাকে…  পর্যবেক্ষক:  ধরুন একদিন আপনি আপনার তিন বন্ধুসহ কোথাও ঘুরতে গেলেন, বাসায় ফিরে আসার পর  কেউ যদি আপনাকে বলে আপনার উমুক বন্ধু কেমন জুতা পড়েছিল !  তখন আপনি বলতে পারলেন না, আর অবাক হলেন নিজের প্রতি !  এমন কিছু হওয়াটা স্বাভাবিক।  হয়তো অনেকক্ষণ সাথে ছিলেন কিন্তু কোন একটা বিষয় আপনার  মনেই নেই ! হতে পারে কাপড়ের রঙ, জুতা কিংবা অন্য কিছু। সবার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা একরকম না।  তবে চাইলে কিছুটা হলেও ঝালিয়ে নেয়া যায় তা। একবার ভাবুনতো প্রথম উদাহরণের কথা।  কেনো আপনার জুতার কথা মনে ছিলনা? আপনার মনে ছিলনা কারণ আপনি তা মনে রাখার  চেষ্টাও করেননি ! যদি করতেন তাহলে হয়তো ঠিকই মনে রাখতে পারতেন।  শখের গোয়েন্দা হতে চাইলে চারপাশের পরিবেশ, কাপড়-চোপড়, ব্যবহার, বেক্ষাপ্পা কিছু, চেহারা,  আচার-ব্যবহার, নাম ইত্যাদিতে ভালোভাবে নজড় দিতে হবে। এই গুণটা থাকা খুবই দরকারি।  অনুমাননির্ভর না হওয়া:  কখনোই শুধুমাত্র অনুমান নির্ভর হয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়া উচিত হবেনা।  যতক্ষণ না যথাযথ প্রমাণাদি হাতে আসে তার আগ পর্যন্ত কোন বিষয়ের  শুধু অনুমানের উপর সিদ্ধান্ত নেয়া যাবেনা।  আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলা যাবেনা:  কাউকেই সন্দেহবশত প্রথমেই অপরাধী বা কাউকে প্রথমেই অপরাধীর তালিকা থেকে খারিজ  করে দেয়া যাবেনা। তথ্য-প্রমাণ না পাওয়া অবধি নিজের অনুমানের উপর কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাবেনা।  হয়তো প্রথমে আপনি এমন কাউকে অপরাধী ভেবে বসে আছেন যে মোটেও অপরাধটা করেনি।  কিংবা এমন কাউকে নির্দোষ ভাবছেন যেই কিনা আসল অপরাধী।  স্মৃতিশক্তি:  শখের গোয়েন্দার জন্যে ভালো স্মৃতিশক্তি থাকাটাও বাঞ্ছনীয়।  বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মনে রাখতে হলে চাই প্রখর স্মৃতিশক্তি।  সব গুণ থাকার পরেও এই গুণটি না থাকলে ফলাফল শূণ্য।  বিভিন্ন অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানকে পরবর্তীতে প্রয়োগের জন্যেও এর দরকার আছে।  যারা মনে করেন তাদের স্মৃতিশক্তি ক্ষীণ।  তারা নিয়মিত ছোটখাট অনুশীলনের মাধ্যমে তা ঝালিয়ে নিতে পারেন।  কয়েকদিনের মধ্যে এই বিষয়ে একটা লেখা দেয়ার চেষ্টা করবো।  পরিচয় আত্মগোপন:  নিরাপত্তার খাতিরে অনেক সময়েই আপনাকে হয়তো  আপনার পরিচয় আত্মগোপন করতে হতে পারে।  আর সেজন্যে আপনাকে নিজের পরিচয় গোপন করে সম্পূর্ণ নতুন পরিচয় নিয়ে নিজেকে  সেভাবে তুলে ধরার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।  ভালো ব্যবহার:  ভালো ও মার্জিত ব্যবহার অন্যের কাছে আপনার ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলবে।  কখনোই কারো উপর নিজের প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করবেন না।  আর অমার্জিত আচরণতো ভুলেও না।  এমন কিছু করা যাবেনা যাতে তদন্তে কারো বিন্দুমাত্র সন্দেহ হয়…  শোনার দক্ষতা:  একজন গোয়েন্দা মাত্রই একজন ভালো শ্রোতা।  কারো সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় কিংবা কারো থেকে কোন তথ্য জানার সময়  আপনাকে একজন ভালো শ্রোতা হতে হবে।  প্রতিটি কথা ভালো ভাবে শোনার চেষ্টা করতে হবে একই সাথে মনে রাখতে হবে।  আর একজন ভালো শ্রোতা স্বাভাবিক অর্থেই মানুষের কাছে প্রিয়। আপনি কোথাও আড্ডা দিচ্ছেন।  কোন একটা বিষয়ে একদম সেরকম একটা বয়ান দিতেছেন এমন সময় আপনারই  কোন বন্ধু বারবার আপনার কথার মাঝে বাঁধা দিয়ে নিজের কিছু কথা যোগ করছে।  বারবার আপনার বন্ধুর বাগড়া দেয়াটা আপনার কাছে বিরক্তিকর মনে হবে।  পক্ষান্তরে যারা মানুষকে স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ দেয় মানুষ তাদেরকে পছন্দ করে…  তাই আপনাকে একজন ভালো শ্রোতাও হতে হবে।  বডি ল্যাংগুয়েজ:  মানুষের বডি ল্যাংগুয়েজ সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে।  মিথ্যা বলার সময় মানুষের চেহারার এক্সপ্রেশন কেমন হয় কিংবা সত্য বলার সময়  কেমন হয় সেগুলো জানতে হবে।  একই সাথে কেউ কোন তথ্য লুকালে সেগুলোও তার শরীরের অঙ্গভঙ্গিমায় ফুটে উঠে।  মানুষের বডি ল্যাংগুয়েজ সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকলে সহজেই অনেক কিছু বোঝা যাবে।  ব্যায়াম:  নিয়মিত ব্যায়াম শরীরকে চাঙ্গা রাখতে সহায়তা করবে।  তাছাড়া শরীরকে শক্তপোক্ত ও সহনশীল করে তুলতেও ব্যায়ামের প্রয়োজন আছে।  শারীরিক, মানসিক দুই প্রকার উন্নতিই সাধিত হবে।  পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেয়া:  সবরকম পরিবেশ পরিস্তির সাথেই নিজেকে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে।  “গোয়েন্দা হইতে চান কিন্তু গোয়াল ঘড়ে থাকতে ডরান” তাহলে কিন্তু হবেনা।  সবরকম পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে।  নিজের উপর আস্থা রাখতে হবে:  উপরের সবগুলো গুণের সাথে আরেকটি গুণ যেটি না থাকলেই নয় !  সেটি হচ্ছে নিজের উপর প্রবল বিশ্বাস ও আস্থা। আত্মবিশ্বাস না থাকলে  কোন কাজেই সফলতা পাওয়া সম্ভব না। সফল হতে হলে অবশ্যই নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে।  একবার আমেরিকার এক গির্জায় সেখানকার ধর্মযাজক সবাইকে জিজ্ঞেস করলেন তাদের মধ্যে কে কে স্বর্গে যাবে।  এতে কিছু মানুষ হাত তুলল। এবার তিনি জিজ্ঞেস করলেন কারা কারা নরকে যাবে।  আগেরবার যারা হাত তোলেনি তাদের সবাই হাত তুললো, শুধু একজন ছাড়া।  তিনি ছিলেন খুবই সাধারণ গোছের একজন মানুষ ।  এবার ধর্মযাজক সেই একজনকে জিজ্ঞেস করলো “তুমি কোথায় যেতে চাও?”  জবাবে ঐ ব্যক্তি বললো “আমার ইচ্ছে করে হোয়াইট হাউজে যেতে”…  এর অনেক সময় পরে আমেরিকার এক প্রদেশের গভর্নর হওয়ার সুযোগ পান।  কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে দেন।  তার স্ত্রী তার এই কাজের জন্যে অনেক আফসোস করে।  কিন্তু তিনি স্ত্রীকে আশ্বাস দিয়ে বলেন  “গভর্নরের চেয়ে প্রেসিডেন্ট পদ নিশ্চয়ই শ্রেষ্ঠ ! আর তা একদিন আমি হবোই”।  এই ঘটনার কয়েক বছর পরেই তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন।  তিনি ছিলেন আব্রাহাম লিংকন ।  যেহেতু এই পর্যন্ত লেখাটা পড়ে এসেছেন সেহেতু ধরেই নিতে পারি  যে আপনি একজন শখের গোয়েন্দা হতে ইচ্ছুক !  উপরের গুণাবলির মধ্যে আপনার কোনগুলো আছে আর কোনগুলোতে ঘাটতি আছে বলে মনে করেন?  কমেন্টে জানান আমাদের।

ছোটবেলা থেকে গোয়েন্দা হওয়ার শখ কার না আছে!!!
আমি আপনাদের সেই শখ পুরনের জন্য
কিছু উপদেশ ও পরামর্শ দিবো বলে আজ এই লিখাটা লিখছি।
লেখার গভীরে যাওয়ার আগেই বলে নিচ্ছি লেখার উদ্দেশ্য শুধুই সাধারণ ধারণা দেয়া।
একটু চেষ্টা করলে যে কারো পক্ষেই পারা সম্ভব। আজ চেষ্টা করবো নতুন কিছু শেখাতে এবং শিখতে।
আর চেষ্টা করবো আমার পক্ষে যতটুকু কম সময়ের ব্যবধানে নতুন লেখা দিতে পারা যায় তা দিতে।
শুধু দরকার সবার মতামত।
তো! শুরু করা যাক---
একজন গোয়েন্দাকে একই সাথে প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন, শক্তিশালী, উপস্থিত বুদ্ধিসম্পন্ন, জ্ঞানী।
অপরাধ বিজ্ঞান,পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞানসহ আরো
বিভিন্ন বিষয়ের জ্ঞানও রাখতে হবে।
এগুলো গেলো গতবাধা কথা, আমরা হতে চাচ্ছি শখের গোয়েন্দা।
যেহেতু আমরা উচ্চমাত্রার গোয়েন্দা হওয়ার চেষ্টা করছিনা সেহেতু এগুলোর কোন কোন বিষয়ে
হালকা পাতলা ধারণা থাকলেই হবে।
আর নিতান্তই প্রয়োজনীয় বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে আমাদের পরবর্তী
লেখাগুলোতে আলোকপাত করা হবে।
আজ আমরা আলোচনা করবো করবো এমন কিছু গুণাবলি নিয়ে যা
একজন শখের গোয়েন্দার না থাকলেই নয়।
সন্দেহপ্রবণতা:
একজন শখের গোয়েন্দা হিসেবে আপনার মধ্যে অবশ্যই সন্দেহপ্রবণতা থাকতে হবে।
যেবিষয়ে গোয়েন্দাগিরি করবেন সে বিষয়ের সাথে সংযুক্ত সবাইকেই সন্দেহ করা শিখতে হবে।
তাহলে সবার সম্পর্কেই যেকোনো তথ্য আপনার সহজে বিশ্বাস হবেনা যতক্ষণনা সেটার প্রমাণ মিলছে।
তবে একটা বিষয়, যখন তদন্ত করবেন তখন নিজের মধ্যে সন্দেহপ্রবণতাটা রাখবেন।
এই গুণটা সবসময়ের জন্যে আয়ত্তে এনে ফেলাটা ঠিক হবেনা।
তাহলে অনেক সময় নিজের খুব কাছের মানুষদেরও বিশ্বাস করতেও কষ্ট হবে।
আর সেটা কারোই কাম্য নয়।
জানার আগ্রহ:
সঠিক ও সত্য তথ্য জানার জন্যে অদম্য চেষ্টা করতে হবে।
আর সে জন্যে চাই নিঃস্বার্থ ভালোবাসার মতই নিঃস্বার্থ আগ্রহ !
তাছাড়া বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানার জন্যেও প্রচুর আগ্রহ থাকতে হবে।
বিভিন্ন বিষয়ে ভালো ধারণা রাখলে সেগুলো পরবর্তিতে
কখনো না কখনো কাজে আসবেই !
বই পড়া:
উপরের টাইটেলটা দেখে অনেকেই অবাক হতে পারেন যে বই পড়া তদন্তে কি সহায়তা করবে !
অবাক হওয়ার কিছু নেই। বই পড়ার অভ্যাস অনেক বিষয়ে গভীর ধারণা দিতে সহায়তা করবে।
গল্প-উপন্যাস পড়া যেতে পারে। তবে বিষয়ভিত্তিক বইগুলো পড়ার অভ্যাস থাকলে সেটা খুব কাজে দিবে।
ধরূণ কোন তদন্তের কাজে বের হলেন সাইকেল নিয়ে। হঠাতই আপনার পায়ের পেশীতে খিঁচুনি ধরলো !
এখন আশেপাশে কোন ডাক্তার নেই যে আপনাকে উদ্ধার করবে এই অবস্থা থেকে।
কিন্তু আপনি একজন বিচক্ষণ মানুষ। আপনি কোন একটা বইয়ে বা আর্টিকেলে জেনেছেন কিভাবে
পেশীর খিঁচুনি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ।
তখন আপনি আপনার জানা তথ্য প্রয়োগ করে নিজেই নিজেকে উদ্ধার করতে পারেন।
অধ্যবসায়:
ছোটবেলায় এমনকি নবম দশম শ্রেণীতেও কম বেশি সবাই অধ্যবসায় রচনাটা পড়ে থাকবেন
(না পড়লে সেটা আপনার দুর্ভাগ্য বলা যেতে পারে) !
শখের গোয়েন্দা হতে অধ্যবসায়েরও যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা আছে।
কোন কাজে সহজেই হাল ছেড়ে দেয়া যাবেনা। একবার না পারলে আবার,
সেবারও না পারলে আবার…
এভাবে চেষ্টা করে যেতে হবে। সফলতা আসবেই !
রবার্ট ব্রুসের গল্পটা হয়তো সবারই জানা।
তিনি ছয়বার যুদ্ধে হারার পরে যখন আশা ছেড়ে দিলেন তখন এক অধ্যবসায়ী মাকড়সার
কাছ থেকে অনুপ্রেরিত হলেন।
সপ্তমবারের মতো আবার যুদ্ধ করলেন এবং নিজের রাজ্য ফিরে পেলেন !
এভাবেই অধ্যবসায়ি হতে হবে এখন শখের গোয়েন্দাকে…
পর্যবেক্ষক:
ধরুন একদিন আপনি আপনার তিন বন্ধুসহ কোথাও ঘুরতে গেলেন, বাসায় ফিরে আসার পর
কেউ যদি আপনাকে বলে আপনার উমুক বন্ধু কেমন জুতা পড়েছিল !
তখন আপনি বলতে পারলেন না, আর অবাক হলেন নিজের প্রতি !
এমন কিছু হওয়াটা স্বাভাবিক।
হয়তো অনেকক্ষণ সাথে ছিলেন কিন্তু কোন একটা বিষয় আপনার
মনেই নেই ! হতে পারে কাপড়ের রঙ, জুতা কিংবা অন্য কিছু। সবার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা একরকম না।
তবে চাইলে কিছুটা হলেও ঝালিয়ে নেয়া যায় তা। একবার ভাবুনতো প্রথম উদাহরণের কথা।
কেনো আপনার জুতার কথা মনে ছিলনা? আপনার মনে ছিলনা কারণ আপনি তা মনে রাখার
চেষ্টাও করেননি ! যদি করতেন তাহলে হয়তো ঠিকই মনে রাখতে পারতেন।
শখের গোয়েন্দা হতে চাইলে চারপাশের পরিবেশ, কাপড়-চোপড়, ব্যবহার, বেক্ষাপ্পা কিছু, চেহারা,
আচার-ব্যবহার, নাম ইত্যাদিতে ভালোভাবে নজড় দিতে হবে। এই গুণটা থাকা খুবই দরকারি।
অনুমাননির্ভর না হওয়া:
কখনোই শুধুমাত্র অনুমান নির্ভর হয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়া উচিত হবেনা।
যতক্ষণ না যথাযথ প্রমাণাদি হাতে আসে তার আগ পর্যন্ত কোন বিষয়ের
শুধু অনুমানের উপর সিদ্ধান্ত নেয়া যাবেনা।
আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলা যাবেনা:
কাউকেই সন্দেহবশত প্রথমেই অপরাধী বা কাউকে প্রথমেই অপরাধীর তালিকা থেকে খারিজ
করে দেয়া যাবেনা। তথ্য-প্রমাণ না পাওয়া অবধি নিজের অনুমানের উপর কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাবেনা।
হয়তো প্রথমে আপনি এমন কাউকে অপরাধী ভেবে বসে আছেন যে মোটেও অপরাধটা করেনি।
কিংবা এমন কাউকে নির্দোষ ভাবছেন যেই কিনা আসল অপরাধী।
স্মৃতিশক্তি:
শখের গোয়েন্দার জন্যে ভালো স্মৃতিশক্তি থাকাটাও বাঞ্ছনীয়।
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মনে রাখতে হলে চাই প্রখর স্মৃতিশক্তি।
সব গুণ থাকার পরেও এই গুণটি না থাকলে ফলাফল শূণ্য।
বিভিন্ন অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানকে পরবর্তীতে প্রয়োগের জন্যেও এর দরকার আছে।
যারা মনে করেন তাদের স্মৃতিশক্তি ক্ষীণ।
তারা নিয়মিত ছোটখাট অনুশীলনের মাধ্যমে তা ঝালিয়ে নিতে পারেন।
কয়েকদিনের মধ্যে এই বিষয়ে একটা লেখা দেয়ার চেষ্টা করবো।
পরিচয় আত্মগোপন:
নিরাপত্তার খাতিরে অনেক সময়েই আপনাকে হয়তো
আপনার পরিচয় আত্মগোপন করতে হতে পারে।
আর সেজন্যে আপনাকে নিজের পরিচয় গোপন করে সম্পূর্ণ নতুন পরিচয় নিয়ে নিজেকে
সেভাবে তুলে ধরার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
ভালো ব্যবহার:
ভালো ও মার্জিত ব্যবহার অন্যের কাছে আপনার ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলবে।
কখনোই কারো উপর নিজের প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করবেন না।
আর অমার্জিত আচরণতো ভুলেও না।
এমন কিছু করা যাবেনা যাতে তদন্তে কারো বিন্দুমাত্র সন্দেহ হয়…
শোনার দক্ষতা:
একজন গোয়েন্দা মাত্রই একজন ভালো শ্রোতা।
কারো সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় কিংবা কারো থেকে কোন তথ্য জানার সময়
আপনাকে একজন ভালো শ্রোতা হতে হবে।
প্রতিটি কথা ভালো ভাবে শোনার চেষ্টা করতে হবে একই সাথে মনে রাখতে হবে।
আর একজন ভালো শ্রোতা স্বাভাবিক অর্থেই মানুষের কাছে প্রিয়। আপনি কোথাও আড্ডা দিচ্ছেন।
কোন একটা বিষয়ে একদম সেরকম একটা বয়ান দিতেছেন এমন সময় আপনারই
কোন বন্ধু বারবার আপনার কথার মাঝে বাঁধা দিয়ে নিজের কিছু কথা যোগ করছে।
বারবার আপনার বন্ধুর বাগড়া দেয়াটা আপনার কাছে বিরক্তিকর মনে হবে।
পক্ষান্তরে যারা মানুষকে স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ দেয় মানুষ তাদেরকে পছন্দ করে…
তাই আপনাকে একজন ভালো শ্রোতাও হতে হবে।
বডি ল্যাংগুয়েজ:
মানুষের বডি ল্যাংগুয়েজ সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে।
মিথ্যা বলার সময় মানুষের চেহারার এক্সপ্রেশন কেমন হয় কিংবা সত্য বলার সময়
কেমন হয় সেগুলো জানতে হবে।
একই সাথে কেউ কোন তথ্য লুকালে সেগুলোও তার শরীরের অঙ্গভঙ্গিমায় ফুটে উঠে।
মানুষের বডি ল্যাংগুয়েজ সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকলে সহজেই অনেক কিছু বোঝা যাবে।
ব্যায়াম:
নিয়মিত ব্যায়াম শরীরকে চাঙ্গা রাখতে সহায়তা করবে।
তাছাড়া শরীরকে শক্তপোক্ত ও সহনশীল করে তুলতেও ব্যায়ামের প্রয়োজন আছে।
শারীরিক, মানসিক দুই প্রকার উন্নতিই সাধিত হবে।
পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেয়া:
সবরকম পরিবেশ পরিস্তির সাথেই নিজেকে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে।
“গোয়েন্দা হইতে চান কিন্তু গোয়াল ঘড়ে থাকতে ডরান” তাহলে কিন্তু হবেনা।
সবরকম পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে।
নিজের উপর আস্থা রাখতে হবে:
উপরের সবগুলো গুণের সাথে আরেকটি গুণ যেটি না থাকলেই নয় !
সেটি হচ্ছে নিজের উপর প্রবল বিশ্বাস ও আস্থা। আত্মবিশ্বাস না থাকলে
কোন কাজেই সফলতা পাওয়া সম্ভব না। সফল হতে হলে অবশ্যই নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে।
একবার আমেরিকার এক গির্জায় সেখানকার ধর্মযাজক সবাইকে জিজ্ঞেস করলেন তাদের মধ্যে কে কে স্বর্গে যাবে।
এতে কিছু মানুষ হাত তুলল। এবার তিনি জিজ্ঞেস করলেন কারা কারা নরকে যাবে।
আগেরবার যারা হাত তোলেনি তাদের সবাই হাত তুললো, শুধু একজন ছাড়া।
তিনি ছিলেন খুবই সাধারণ গোছের একজন মানুষ ।
এবার ধর্মযাজক সেই একজনকে জিজ্ঞেস করলো “তুমি কোথায় যেতে চাও?”
জবাবে ঐ ব্যক্তি বললো “আমার ইচ্ছে করে হোয়াইট হাউজে যেতে”…
এর অনেক সময় পরে আমেরিকার এক প্রদেশের গভর্নর হওয়ার সুযোগ পান।
কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে দেন।
তার স্ত্রী তার এই কাজের জন্যে অনেক আফসোস করে।
কিন্তু তিনি স্ত্রীকে আশ্বাস দিয়ে বলেন
“গভর্নরের চেয়ে প্রেসিডেন্ট পদ নিশ্চয়ই শ্রেষ্ঠ ! আর তা একদিন আমি হবোই”।
এই ঘটনার কয়েক বছর পরেই তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন।
তিনি ছিলেন আব্রাহাম লিংকন ।
যেহেতু এই পর্যন্ত লেখাটা পড়ে এসেছেন সেহেতু ধরেই নিতে পারি
যে আপনি একজন শখের গোয়েন্দা হতে ইচ্ছুক !
উপরের গুণাবলির মধ্যে আপনার কোনগুলো আছে আর কোনগুলোতে ঘাটতি আছে বলে মনে করেন?
কমেন্টে জানান আমাদের।
কিভাবে গোয়েন্দা হওয়া যায় কিভাবে গোয়েন্দা হওয়া যায় Reviewed by Admin on October 31, 2018 Rating: 5
Powered by Blogger.