VPN এর ওপর সাধারন আলোচনা


VPN শব্দটার সাথে আমরা সবাই কম-বেশি পরিচিত। তবে শুধু নামের সাথেই পরিচিত, কিন্তু ইহা যে কি জিনিস তা অধিকাংশ মানুষই জানে না। আগের একটা পোস্টে আমি ভিপিএন নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম তো আজকেই সেটা নিয়ে লিখতে বসলাম।
আজকে আমরা VPN কি, এর কাজ কি- এসমস্ত বিষয় সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করবো তো চলুন শুরু করা যাক।
VPN এর পূর্ণ রূপ হল- Virtual Private Network. সোজা বাংলায় এর সংজ্ঞা দাড়ায়, VPN হল একটা কাল্পনিক ‘Tunnel’ যার মাধ্যমে নিরাপদে তথ্য আদান প্রদান করা যায়। এই ‘Tunnel’ বা সুড়ঙ্গের বাস্তবে কোন অস্তিত্ব নেই, এটি দিয়ে মূলত কাল্পনিক একটা প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বোঝানো হচ্ছে যেটি দিয়ে ইন্টারনেটে নিরাপদে তথ্য আদান প্রদান করা যায়।আমরা এখন ‘নিরাপদ’ keyword টির উপর ফোকাস করবো।
ইন্টারনেট মূলত উন্মুক্ত তথ্য আদান প্রদানের জায়গা। যেহেতু এটি পাবলিক নেটওয়ার্ক অর্থাৎ, পৃথিবীর সবাই সংযুক্ত তাই এখানে সরাসরি তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে তথ্যের গোপনীয়তা ফাঁস হয়ে যাবার একটা ঝুঁকি আছে। এই ঝুঁকি এড়ানোর জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিগত বা প্রাইভেট নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হওয়ার নিরাপদ পদ্ধতিই হল VPN। এই পদ্ধতিতে ব্যবহারকারী এবং প্রাইভেট নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করার জন্য ইন্টারনেটে একটি কাল্পনিক সুড়ঙ্গ তৈরী হয়।
VPN-এর শ্রেণীবিভাগ:VPN-কে বিভিন্নভাবে classify করা যায়। যেমন- PPTP VPN, Site to Site VPN, L2TP VPN, Remote Access VPN, IPsec, SSL, MPLS VPN, Hybrid VPN ইত্যাদি।
কিভাবে VPN কাজ করে? একটি VPN সার্ভারে VPN ক্লায়েন্ট একটি বাহ্যিক নেটওয়ার্ক ইন্টারফেসের মাধ্যমে সংযুক্ত হতে পারেন। VPN-এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী এবং প্রাইভেট নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করার জন্য ইন্টারনেটে একটি কাল্পনিক সুড়ঙ্গ তৈরী হয় (যেটা আমরা আগেই বলেছি)। এই পদ্ধতিতে তথ্য encrypted অবস্থায় আদান-প্রদান করা হয়, ফলে তথ্যগুলো সুরক্ষিত থাকে। VPN এর জন্য প্রাইভেট নেটওয়ার্কে একটা VPN সার্ভার থাকে এবং ব্যবহারকারীর পিসিতে VPN ক্লায়েন্ট কনফিগার থাকে। যখন কোন ব্যবহারকারী VPN এর মাধ্যমে তার প্রাইভেট নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হতে চাইবে প্রথমে তার পিসিতে ইন্টারনেট কানেকশন নিশ্চিত করতে হবে এর পর VPN ক্লায়েন্টের মাধ্যমে VPN সার্ভারে লগিন করবে। লগিন করার পর যদিও ব্যবহারকারী তার নেটওয়ার্ক থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে তারপরেও সে প্রাইভেট নেটওয়ার্কের সব সুযোগ সুবিধাগুলো পাবে।
VPN-এর সুবিধাগুলো কি কি?
১। VPN ব্যবহার করার অর্থ হল আপনি ডাটা নিরাপদে আদান প্রদান করতে পারছেন।
২। VPN ব্যবহার করলে আপনার অবস্থান কেউ ট্র্যাক করতে পারবে না। (সব ক্ষেত্রে না ভিপিএন ও কিন্তু পুরোপুরি নিরাপদ না)
৩। IP address (Internet Protocol address) হাইড করে রাখে। অর্থাৎ, হ্যাকারদের কবলে পড়ার সম্ভাবনা নাই।
৪। আপনার ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী আইপিএস থেকে নেটের ফুল স্পিড পাবেন।
৫। VPN দিয়ে আপনি আইএসপি তে ব্লক করা সাইট ভিজিট করতে পারবেন। যেমন ধরেন, যদি ইউটিউব আমাদের দেশে বন্ধ করে দেয়া হয়, তাহলেও আপনি VPN ব্যবহার করে ইউটিউবে ঢুকতে পারবেন।
৬। এটি নিরাপদ যোগাযোগ এবং ডাটা encrypt করার একটি পদ্ধতি হিসেবে কাজে লাগে। মানে VPN আপনার মেশিনকে একটি ভার্চুয়াল নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারে এবং আপনার পাঠানো সব data দ্রুততার সঙ্গে encrypt করে ফেলে অর্থাৎ public domain থেকে লুকিয়ে রাখে এবং এটা আপনার browsing history-র কোনো ট্র্যাক রাখে না। কাজেই আপনি অনলাইনে পুরোপুরি নিরাপদ।
তবে এত সুবিধার পরেও VPN-এর কিছু অসুবিধা রয়েছে। এর প্রধান অসুবিধা হচ্ছে এটি আপনাকে টরেন্ট ফাইল ডাউনলোডের সুবিধা দেবে না এবং এটি সম্পূর্ণ ইন্টারনেট নির্ভর।VPN সার্ভিস ফ্রি কিংবা প্রিমিয়াম হতে পারে। যদিও অধিকাংশ VPN সার্ভিসের ক্ষেত্রেই টাকা গুণতে হয়। তবে কিছু জনপ্রিয় ফ্রি VPN সার্ভিস রয়েছে, যা দিয়ে আপনি প্রিমিয়ামের কাছাকাছি সুবিধা পাবেন। যেমন- ProXPN, Hotspot Shield, Cybershost, SecurityKiss, SpotFlux ইত্যাদি।
এত কিছুর পরও পুরোপুরি জোর দিয়ে বলা যায়না যে ভিপিএন ব্যবহার করলে আপনি পুরোপুরি নিরাপদ থাকবেন। আমি জোর দিয়ে কোনো কিছুই বলবোনা, কারন অনেক এডভান্সড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে এখন যার ফলে আপনি এডভান্সড লেভেল এর কোনো হ্যাকার বা সিকিউরিটি অর্গানাইজেশন এর চোখ ফাকি দিতে পারবেন না। আমি সবসময় একটা জিনিসের উপর বিশ্বাস করি যে ইন্টারনেটে কোনো কিছুই বা কেউই নিরাপদ না। সুতরাং যাই করেন না কেনো সবই নিজ দায়িত্বে বুঝে শুনে করবেন।

VPN এর ওপর সাধারন আলোচনা VPN এর ওপর সাধারন আলোচনা Reviewed by Admin on October 31, 2018 Rating: 5
Powered by Blogger.